কালো বিধবা ও অন্যান্য কবিতা : মলয় রায়চৌধুরী




উওম্যনিয়া

আহা, অদ্য একটি তরতাজা সিঙাড়া খাইলাম
ভিতরে গুলাবিরাঙা চিনাবাদাম , কেবলই একটি--
ফুলকপি ছিল, ইহা যে ছেৎরানো ফুলকপির ঋতু--
জানি না কেন যে সিঙাড়া প্রস্তুতকারক মহারাজ
একদিকে আকর্ষক একটি ছিদ্র রাখিয়াছিলেন
অঙ্গুলি দিয়া সিঙাড়ার ভিতরে চিনাবাদামখানি
অনুভব করি, জিহ্বাগ্র প্রবেশকরতঃ স্বাদ লই
দধিমধু লবণাক্ত, বিজ্ঞানীরা কহিয়াছেন
লবণাক্ত হইবার কারণ রজরসে ইউরিয়া থাকে--
জীবনানন্দ সভাগৃহে কবিতা শুনিবার তরে
আসিয়াছিলাম; কোনো এক মিহিকন্ঠী-কবি
কবিতা পড়িতেছিলেন; আমি তাঁকে ধন্যবাদ
মনে-মনে দিই, অহো, বড়োই সুস্বাদু আপনার
তপ্ত সিঙাড়াখানি, সোমালিয়া নিষিদ্ধ করিয়াছে;
আহা, এই প্রথম নারীবাদী সিঙাড়ার আস্বাদ লই


কালো বিধবা

কালো বিধবার ডাক ফিরাতে পারি না
সঙ্গম করার কালে মনোরম মৃত্যু চাহিয়াছি
যেমত পুংমাকড়ের হয়; স্ত্রিংমাকড়ানি
থুতুর ঝুলন্ত রেশমে বাঁধি আহ্বান করিবে
আষ্টেপৃষ্টে সবুজ পাতার উপরে ল'য়া গিয়া
মোর পালপাসখানি যোনিদ্বারে লইবে টানিয়া
দশবাহুর আলিঙ্গনে শুষিবে লক্ষ শুক্রাণু
দিবাদ্বিপ্রহরে নিশিডাকে আক্রান্ত থরহরি
ব্যকরণ বিন্যাস গণিত শিখাবে দশ নখে
আমি ক্লান্ত হলে পর ক্রমশ খাইতে থাকিবে
সঙ্গম চলাকালে চাখিবে সুস্বাদু ঝুরিভাজা
উইপোকাসম লিঙ্গখানি কুরিবে প্রথমে
প্রেমিকার উদরে প্রবেশ করিয়া কী আনন্দ
বুঝাইব কেমনে, সমগ্র দেহ যে গান গায়--
আহ্লাদের কর্কটরোগ তোমরা বুঝিবে না


রাষ্ট্রবিরোধিতা

জ্ঞান ফিরিবার পর দেখিলাম, চতুস্পার্শে ছয়ইঞ্চি ক্ষুদ্র যুবতীরা--
দেড়শো বৎসর পর ফিরিয়া আসিল জ্ঞান, ততোদিনে
অতিউন্নত বাকচর্চা প্রয়োগ করতঃ ছয় ইঞ্চির হইয়া গিয়াছে মানুষেরা
সুতা দিয়া আমাকে চতুর্দিক হইতে বাঁধিয়া ফেলিয়াছে
শুইয়া আছি ঘাসের উপরে, কথাবার্তা শুনিয়া বুঝিয়াছি ইহা বঙ্গদেশ
উলঙ্গ উহারা, কেহ বুকের উপরে কেহ পেটে কেহ উরুতে হাঁটিতেছে
উহাদের কথোপকথন হইতে বুঝিলাম এখন এ-রাজ্যের নাম লিলিপুট
কখনও বাকবিপ্লব ঘটিয়াছিল, তাই, মানুষেরা ক্ষুদ্র ও উদার হইয়া গিয়াছে
বেঘোরে যা কহিয়াছিলাম তাহা উহাদের মতে অশ্লীল ও রাষ্ট্রবিরোধী
জানিতে চাহিলাম তাহাদের রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোন কর্ম করিয়াছি আমি
আমার কুঁচকির ভাঁজে জনৈকা যুবতী হয়তো খুঁজিতেছিল স্বর্ণভাণ্ডার
জঙ্গলের বাহিরে আসিয়া যুবতীটি চিৎকার করিয়া সবারে কহিলা
"এই দৈত্যের চাড্ডির ভিতরে ছাগু দেখা যায়, ইহা রাষ্ট্রবিরোধী"




14 comments:

  1. জীবনবৃত্তীয় কখনো কখনো আত্মবৃত্তীয় পরিব্যাপ্তি নিয়ে আসে। সেই ভাবনা ও প্রবৃত্তির ধারকও বাহক আমরা সভ্যতাচারীরা। কবিতাগুলি পড়তে পড়তে আবার নিজেরভেতর ঘুরপাক খাচ্ছি।

    ReplyDelete
  2. সাধু ভাষায় দারুন .....
    সবকটি গিলিলাম।

    ReplyDelete
  3. কালো বিধবা অসাধারণ । ভাবা যায় না । সাধু ভাষায় প্রেমিকার খাদ্য ।

    ReplyDelete
  4. এই তিনটি কবিতা ওল্ড ইংলিশে অনুবাদের চেষ্টা করব । তৃতীয় কবিতায় লিলিপুটের পরিবর্তে হবিটদেশ কিংবা হাফলিংদেশ বলতে পারতেন, লর্ড অফ দি রিংসে যেমন আছে ।

    ReplyDelete
  5. অসামান্য হীরকখন্ড তিনটি আমাদের কাছে এক অন্নন্য রুপ তুলে ধরে।কবি চিরকালই আমাদের কাছে এক ধ্রবতারার মতো, যাকে একক ধরে পথ চলা যায়। "বাক"কে অসংখ্য কৃতজ্ঞতা এভাবে কবি কে আমাদের মত সামান্য পাঠকের কাছে তুলে ধরার জন্য।

    ReplyDelete
  6. তিনটে কবিতাই দেখছি ইউরোপা থেকে পুরনো প্রোগ্রাম রেপ্লিকেট করে ন্যানো চিপ ভাইরাস হয়ে ৭৫কোটি আলোক বর্ষ পার করে যে গ্রহটায় এসেছে সে গ্রহের নাম সবুজ শালুতে লেখা "কবিদের ইউটোপিয়া" । তোরণে টব্যাক স্প্রে করছে কটা বাদামি মাকড়সা , তাদের সব কটাই কী আয়রনি ট্রান্সজেন্ডার!

    ReplyDelete
  7. অনবদ্য
    সত্যম! শিবম!! সুন্দরম!!!

    ReplyDelete
  8. অসাধারণ ব্ল্যাক উইডো দেখলাম । অনবদ্য।

    ReplyDelete
  9. সাধু স্বাদু

    ReplyDelete
  10. সম্পূর্ণ ভিন্ন ফ্লেভার
    অনেক সুন্দর

    ReplyDelete
  11. তিনটি কবিতার ত্রিমাত্রিক আবেদন অনন্য, জয়তু ,..কাব্যলক্ষ্মী

    ReplyDelete
  12. অন্য ভাবনায় মলয়দা বরাবরই অনন্য। এই লেখাগুলোও তার ব্যতিক্রম নয়। ভাবনার গভীরতা আর প্রকাশভঙ্গী যখন সমুদ্রে গিয়ে মেশে তখন এমন সব লেখার জন্ম হয়।

    ReplyDelete
  13. "বাকবিপ্লব" ... চমৎকার লাগল...

    ReplyDelete