মগডালে কথার খেলা : মণীন্দ্র গুপ্ত



আমার তিনতলার ঝুলবারান্দার নীচে কয়েকটা মাটির ঢিবি ঘিরে
তেলাকুচা, কালকাসুন্দি, হাতিশুঁড় ঘন হয়ে জন্মেছে।
পাশে নিরিবিলি নিজস্ব মেটে রাস্তা।
জায়গাটা জনহীন আর ফাঁকা দেখে পথচারী চাকুরে, ব্যবসায়ী,
ছাত্র ও বেকারেরা পায়চারি করতে করতে
বিভোর হয়ে মোবাইলে কথা বলে।

কথা যে কত রকম- প্রার্থনা, আর্জি, অভিযোগ, অনুনয়-
কথার ধাক্কায় ধাক্কায় সেই জংলা জমিতে কৌটোবাদাম,
আকাশমণি, আকন্দ গাছ লম্বা হতে থাকে।
বাকলের নীচে সবুজ শিরা বেয়ে মোবাইলধারীদের কথা
মগডাল পর্যন্ত ওঠে।

এবং গাছের মাথায়, ডালপালায় আমি ভূতের খেলা দেখি :
পাতার তলায় তীক্ষ্ণ কাঁটার মতো ঝিকঝিকে ছুঁচের পাত দেখা দেয়,
পাখি রক্তাক্ত হয়ে ডাকে।
ফুলের গুচ্ছ হঠাৎ ফুটে ওঠে, মধুর গর্ত খুলে যায়।
মাকড়সা দোলনার খেলা দেখায়।
চাঁদনি রাতে আকাশে যখন চাঁদ, ভ্যারেন্ডা গাছ তখন
লক্ষ লক্ষ বুদবুদ ভাসিয়ে সেই দিকে চেয়ে থাকে।


                                      (চিত্রঋণ : ‘অক্ষয় মালবেরি’ গ্রন্থের প্রচ্ছদ-অংশ, শিল্পী- কবি স্বয়ং)

10 comments:

  1. এই হলেন মণীন্দ্র গুপ্ত । পরম্পরার পাশাপাশি সমকালীন দৃষ্টি মেলানো স্মৃতি ও গ্রামীণ টোটেম , ভ্যারেন্ডা ও তেলাকুচা এসবই লক্ষ লক্ষ বুদবুদ ভাসিয়ে দেয় আমাদের দিকে ।

    ReplyDelete
  2. jhijhike chhucher paat,raktakto pakhi,fuler guchho,modhur garto,makorsar dolna--- oophs! Sabder Ray-Bunuel-Godard

    ReplyDelete
  3. খুব ভালো লাগল।!যদি আমি লিখতে পারতাম...

    ReplyDelete
  4. দারুণ লাগলো। সত্যিই অসাধারণ

    ReplyDelete